ব্যাটারি ব্যাকআপ বাড়াতে যে সব বিষয় মেনে চলতে হবে এবং ব্যাটারি দীীর্ঘদিন ভাল রাখার কিছু টিপস
তবে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা প্রায়ই যে ব্যাপারটি নিয়ে বিরক্তি এবং অভিযোগ করে থাকেন তা হলো অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের ব্যাটারি ব্যাকআপ। শক্তিশালি প্রসেসর, র্যাম, হাই রেজুলেশন ডিসপ্লে এবং নানাবিধ ব্যবহারের কারণর অধিক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ব্যাটারি থেকেও অনেক সময় দেখা যায় ব্যবহারকারী ব্যক্তি তার কাঙ্ক্ষিত ব্যাটারি ব্যাকআপ পাচ্ছেন না।
অথচ সহজ কিছু টিপস ফলো করে সহজেই ব্যাটারি ব্যাকআপ বাড়িয়ে নেয়া যায় ।
যে সব জিনিষ মেনে চলতে হবে ঃ
১) বিনা প্রয়োজনে আপনার অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের Wifi, GPS, Bluetooth, 3G কানেক্টিভিটি অন করে রাখবেন না। Wifi, GPS, Bluetooth, 3G প্রচুর ব্যাটারি ইউটিলাইজ করে থাকে।
২) আপনার ডিভাইসটি অটো ব্রাইটনেস সমর্থিত হলে সেটি অটো করে রাখাই ভাল অযথা বেশি ব্রাইটনেস ব্যবহার না করে সময় উপযোগী ব্রাইটনেস ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। এতে আপনার দৃষ্টি শক্তি যেমন ভাল থাকবে, ব্যাটারি ব্যাকআপও বৃদ্ধি পাবে অনেক গুণ।
৩) লাইভ ওয়ালপেপার জিনিসটা ব্যবহার না করাই শ্রেয় কেননা এটি বেশ ভাল ব্যাটারি ইউটিলাইজ করে।
৪) সেন্সর ব্যবহার করে কাজ করে এমন কোনও অ্যাপস বন্ধ করতে চাইলে কেবল মিনিমাইজ না করে পুরোপুরি বন্ধ করবেন। আইসক্রিম স্যান্ডউইচ এবং এর পরবর্তি অ্যান্ড্রয়েড ভার্সনগুলোতে খুব সহজেই হোম বাটন চেপে ধরে সেই এপস টাকে ডানে বামে সোয়াইপ করে বন্ধ করতে পারবেন। অন্যান্য ভার্সনের ক্ষেত্রে কোনও ভাল টাস্ক ম্যানেজার ব্যবহার করুন।
৫) একটার বেশি Antivirus কিংবা Battery Saver অ্যাপস কখনও ব্যবহার করবেন না। Juice Defender অ্যাপসটি ব্যাটারি সেভার হিসেবে বেশ কাজের। গুগল প্লে স্টোর থেকে এটি বিনা মুল্যে সংগ্রহ করা যাবে।
৬) রুটেড ডিভাইস ব্যবহারকারীগন অ্যাপ রান টাইম ম্যানেজমেন্ট এর জন্য Greenify অ্যাপটি ব্যাবহার করতে পারেন। এতে করে অযাচিত, অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস আপনার ডিভাইসের ব্যাকগ্রাউন্ড এ রান করতে পারবে না, ফলে ব্যাটারি অনেক বাড়বে। এই অ্যাপটিও প্লে স্টোর থেকে বিনা মুল্যে ডাউনলোড করা যাবে।
ব্যাটারি দীীর্ঘদিন ভাল রাখার কিছু টিপস ঃ
- ব্যাটারিকে সহজে ১৫-২০% এর নিচে ড্রেইন হতে দিবেন না অর্থাৎ ব্যাটারি ১৫-২০% হলেই দেরি না করে চার্জে লাগাব
- নিতান্তই বাধ্য না হলে চার্জে লাগানো অবস্থায় ফোন চালাবেন না।
- চার্জ একটানা দেয়ার চেষ্টা করবেন। খেয়াল রাখবেন একবার চার্জে লাগালে অন্তত যাতে ৩৫% চার্জ একবারেই হয়। আর পুরো একটানা দিতে পারলেতো কথাই নেই।
- ব্যাটারি ১০০% হওয়ার পর এক সেকেন্ডও আর চার্জে লাগিয়ে রাখবেন না। ১০০% চার্জ হওয়ার সাথে সাথেই সেটি আনপ্লাগ করুন। মনে রাখবেন রাত্রে ফোন চার্জে লাগিয়ে কখনও ঘুমাবেন না।
- ঘন ঘন আপনার ফোনটি চার্জ দিবেন না। চার্জ ৫০% এর উপর থাকলে অযথাই চার্জে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে ৩৫-৩০% এর নিচে নামার পর চার্জে দেওয়া যাবে।
- যেসব অ্যাপস এর Wakelock আছে সেসব অ্যাপস পরিহার করার চেষ্টা করুন। Wakelock আছে কিনা তা Better Battery Stats এই অ্যাপসটি দিয়ে দেখে নিতে পারেন।
- প্রতি মাসে বা বিশ দিনে একবার ব্যাটারি সম্পূর্ণ ০% হয়ে ফোন বন্ধ হয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, বন্ধ হলে আবার চালান,কিছুক্ষন চলে আবার বন্ধ হলে একটানা কোন বিরতি ছাড়া ১০০% পর্যন্ত চার্জ দিন, ১০০% হলে ফোন চার্জ থেকে খুলুন এবং ফোন বন্ধ করুন। এবার ব্যাটারি খুলে তা আবার সেটে লাগান এবং সেট অন করুন। দেখবেন ১০-১২% চার্জ কমে গেছে। এ অবস্থায় ফোনটি আবার চার্জে দিন এবং চার্জ ১০০% হলে ডিভাইস আনপ্লাগ করুন। এই কাজটা প্রতি ২০-৩০ দিনে একবার করবেন।
উপরের টিপস গুলো যথাযথ অনুসরণ করে আপনারা আপনাদের অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের ব্যাটারি ব্যাকআপ বাড়িয়ে নিতে পারবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। তো আর দেরি না করে যারা তাদের ব্যাটারি নিয়ে হতাশায় ভুগছেন, তারা কৌশলগুলো অনুসরণ করুন। আর এ সংক্রান্ত কোন মতামত আমাদের জানাতে ভুলে যাবেন না যেন।